সিরিয়ার বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল-শারা জানিয়েছেন, দেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও নির্বাচন সম্পন্ন হতে চার বছর সময় লাগতে পারে। গত রোববার সৌদি আরব ভিত্তিক আল আরাবিয়া টিভির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার নেতৃত্বাধীন ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তাদের মিত্ররা গত মাসে এক আকস্মিক আক্রমণে সিরিয়ার দীর্ঘকালীন শাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে।
আহমেদ আল-শারা জানিয়েছেন, নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে, এবং পরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও জানান, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মার্চ ১ পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করবে।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেইর পেডারসেনও সম্প্রতি সিরিয়া সফরে এসে একটি নতুন সংবিধান গ্রহণ এবং নির্বাচন সম্পন্ন করার মাধ্যমে সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান:
আহমেদ আল-শারা আশা করছেন যে, সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে, কারণ এই নিষেধাজ্ঞাগুলি আসাদ সরকারের অপরাধের কারণে আরোপ করা হয়েছিল। এখন যেহেতু আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন, তিনি মনে করেন, নিষেধাজ্ঞাগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রত্যাহার হওয়া উচিত।
রাশিয়া ও ইরানের সাথে সম্পর্কের গুরুত্ব:
শারা বলেন, সিরিয়া রাশিয়া এবং ইরানের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে, তবে এসব সম্পর্ক উভয় দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে হবে। তিনি জানান, সিরিয়ার অস্ত্রের বেশিরভাগই রাশিয়ান এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় রুশ বিশেষজ্ঞরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
কুর্দি বাহিনীকে জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব:
শারা সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কুর্দি নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এবং তাদের সামরিক বাহিনী এসডিএফকে জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মতে, অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রের হাতে থাকবে এবং যারা যোগ্য, তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে পারবে।
তিনি সৌদি আরবসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য সিরিয়ার পুনর্গঠনে বিশাল বিনিয়োগের সুযোগ উল্লেখ করেছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, এই উদ্যোগগুলো সিরিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।